যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপে খেলতে পারবে ইরান?

যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপে খেলতে পারবে ইরান?
নতুন আঙ্গিকে মাঠে গড়াতে যাচ্ছে ২০২৭ ফিফা বিশ্বকাপ। প্রথমবারের মতো ৪৮ দেশ নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব ফুটবলের মহারণ। যৌথভাবে তিনটি আয়োজন করবে বিশ্বকাপের আগামী আসর। ইতোমধ্যেই বিশ্বকাপের কাউন্টডাউন শুরু করে দিয়েছে ফিফা। ইতিহাসের স্বাক্ষী হতে যাওয়া আসর নিয়ে আগেই শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক। আয়োজক দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
২০২৬ বিশ্বকাপের আয়োজক কারা
প্রথমবারের মতো তিন দেশে অনুষ্ঠিত হবে ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ। কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে সহ-আয়োজক হিসেবে আছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ আয়োজন হবে যুক্তরাষ্ট্রেই। বিশ্বকাপের আগামী আগরে মোট ১৬টি শহরে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচ। যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ১১টি, মেক্সিকোতে ৩টি এবং কানাডায় ২টি। তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে পুরো আয়োজনকে।
বিশ্বকাপে ইরানের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলেও প্রশ্ন রয়ে গেছে
এখন পর্যন্ত মোট ১৩টি দেশ বিশ্ব্কাপে খেলা নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে আছে এশিয়ার দেশ ইরানও। চলতি বছরের মার্চে বাছাইপর্ব খেলে বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করেছে তারা। এ নিয়ে টানা টানা চার বিশ্বকাপে জায়গা করে নিলো ইরান। মূলত ইরানকে নিয়েই সমস্যা।
যুক্তরাষ্ট্র-ইরান রাজনৈতিক টানাপোড়েনের প্রভাব ফুটবলে
ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অনেক দিন ধরেই বৈরী রাজনৈতিক সম্পর্ক চলে আসছে। ইরানিদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পেতে নানা কড়াকড়ি দিয়েছে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র, রয়েছে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাও। গত ১২ দিন ধরে চলা ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ সেটাকে নতুন করে আরো বৈরী করে তুলেছে।
ইসরায়েলে সঙ্গে মিলে ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানও মধ্যপ্রাচ্যে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাটিগুলোতে মিসাইল হামলা চালিয়ে সেটার জবাব দিয়েছে। এরপরই ইরানিদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে খেলা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চিয়তা।
ফিফার নিয়ম কি বলে?
ফিফার নিয়মে অবশ্য কোয়ালিফাই করা কোনো দেশকে বাদ দেওয়ার কথা নেই। সে হিসেবে ইরানের যুক্তরাষ্ট্রে খেলতে যেতে কোনো সমস্যা নেই। তবে যুদ্ধরত দেশের বিশ্বকাপে নিষেধাজ্ঞায় পড়ার ঘটনাও আছে। যেমন রাশিয়াকে ইউক্রেনে হামলার পর আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করেছে ফিফা ও উয়েফা।
যে বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে ইরানের জন্য
২০২৬ বিশ্বকাপে খেলতে অবশ্য ইরানের জন্য একটি বিকল্প ব্যবস্থাও রয়েছে। সেজন্য অবশ্যই ‘এ’ গ্রুপে থাকতে হবে ইরানকে। ‘এ’ গ্রুপের সবগুলো ম্যাচই হবে আরেক আয়োজক দেশ মেক্সিকোতে। সেক্ষেত্রে নকআউট পর্বের দুই রাউন্ডও (শেষ ৩২ ও শেষ ১৬) খেলতে পারবে মেক্সিকোতেই। আর ইরান এর আগে কখনো গ্রুপ পর্ব পার হয়ে নকআউট পর্বে খেলতে পারেনি।
ফিফার অবস্থান কী?
ইরানকে এমন সুযোগ দেওয়া হবে কিনা? সেটি বোঝা যাচ্ছে না এখনো। বিষয়টি জানতে ‘দ্যা গার্ডিয়ান; থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। অবশ্য তার জন্য এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াও কঠিন হবে বলেই মনে হয়। কারণ ইতোমধ্যেই তিনি ইরানে হামলার অনুমতি দেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নানা প্রোগ্রামে অংশ নিচ্ছেন।
আয়োজক কমিটি কী বলছে?
ফিফার আয়োজক কমিটির সদস্য মেক্সিকো, কানাডা ও ইরানের প্রতিনিধি। তবে এই কমিটির সভাপতি উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্ডার সেফরিন। এর আগে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর ২০২২ সাল থেকে ইউক্রেন ও বেলারুশকে উয়েফার প্রতিযোগিতা থেকে বিরত রেখেছে। তাই আসন্ন বিশ্বকাপে ইরানকেও এমন কিছুর মুখোমুখি দাঁড়াতে হতে পারে।