সিলেট টেস্ট : মিরাজের ফাইফারের পরও পিছিয়ে বাংলাদেশ

আগেরদিন যেভাবে শুরু করেছিল জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার সেটা দেখে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের জন্য বড় বিপদই অপেক্ষা করছে। তবে গতকাল দ্বিতীয় দিনে সেই ধারাটা অব্যাহত রাখতে পারেনি রোডেশিয়ানরা। নাহিদ রানার শুরুর পরে শেষটা করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই অলরাউন্ডারের ফাইফারে তিনশো পেরুনোর আগেই শেষ হয়েছে জিম্বাবুয়ের ইনিংস। তবে শেষ বিকেলটা স্বস্তিতে পার করতে পারেনি বাংলাদেশ।

প্রথম ইনিংসে ২৭৩ রানে থেমেছিল জিম্বাবুয়ে। তাতে ৮২ রানের লিড পেয়েছিল সফরকারীরা। শেষ বিকেলে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিংয়ে নেমে এবারও শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দ্বিতীয় দিন শেষে এক উইকেট হারিয়ে ৫৭ রান তুলেছে বাংলাদেশ। এখনো পিছিয়ে ২৫ রানে। ২৮ রান করে অপরাজিত আছেন মাহমুদুল হাসান জয় আর মুমিনুল হক ১৫ রানে।

৮২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে টপঅর্ডারের চিরায়ত ব্যর্থতা আরেকবার উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ। ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই সাজঘরে ফিরেন সাদমান ইসলাম। তার ৪ রানে ফেরায় ভাঙে ১৩ রানের উদ্বোধনী জুটি। তবে এরপরে আর কোনো ভুল করেনি মাহমুদুল হাসান জয় আর মুমিনুল হক।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। তিনে নেমে দারুণ ব্যাটিং করেছেন মুমিনুল হক। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার এদিন কোনো সুযোগ দেননি। তবে আরেক ওপেনার জয়, ভাগ্যের কারণেই অপরাজিত থেকেছেন। উইকেটের পেছনে তার সহজ ক্যাচ ফেলেছেন মায়াভো। জীবন পেয়ে ইনিংস লম্বা করার চেষ্টা করছেন এই তরুণ ওপেনার।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন ৪৪ রান তুলেছেন জয় ও মুমিনুল। তবে এখনো ২৫ রানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। তাই আজ সকালে কঠিন সময়ের অপেক্ষা করছে বাংলাদেশি ব্যাটারদের জন্য।

এর আগে গতকাল সিলেটের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটেও অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। তাতে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানের বেশি করতে পারেনি তারা। এরপর শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশিদের ব্যাটিং শিখিয়েছিলেন দুই রোডেশিয়ান ওপেনার। তাতে কোনো উইকেট হারানো ছাড়াই দিন শেষ করেছিল জিম্বাবুয়ে।

আজ দিনের শুরুতেই বাংলাদেশি পেসারদের তোপের মুখে পড়ে জিম্বাবুয়ে। পাশাপাশি স্পিনাররাও ভালো বোলিং করেছেন। বিশেষ করে মেহেদি হাসান মিরাজ। এই ডানহাতি অফ স্পিনারের ফাইফারে জিম্বাবুয়েকে ২৭৩ রানে থামায় বাংলাদেশ।

আগের দিন ইতিবাচক ব্যাটিং করা বেনেট এদিনও ভালো শুরু করেন। মাত্র ৫৬ বলে তিনি পূর্ণ করেন ফিফটি। তবে তাকে ফিরিয়েই দিনটা শুরু করেন নাহিদ রানা। পরে নাহিদের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি দূর থেকে খেলার চেষ্টায় কট বিহাইন্ড হন ৫৬ রান করা ওপেনার। নিকোলাস ওয়েলচকে (২) উইকেটে দাঁড়াতে দেননি হাসান মাহমুদ। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে নাহিদের ব্যাক অব লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলে কট বিহাইন্ড হন ক্রেইগ আরভাইন।

প্রথম সেশনে মাত্র ৬৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে লিড পাওয়ার আশা জাগায় বাংলাদেশ। কিন্তু ওয়েসলি মাধভেরেকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন উইলিয়ামস। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে আরও একটি পঞ্চাশ করেন দারুণ ফর্মে থাকা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। মাদেভেরেকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন খালেদ আহমেদ।

এরপর শেন উইলিয়ামসকে (৫৯) ফিরিয়ে শুরু করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর একে একে নায়াশা মায়াভো (৩৫), ওয়েলিংটন মাসাকাদজা (৬), ব্লেসিং মুজারাবানি (১৭) আর ভিক্টর নিয়াউচিকে (৭) ফিরিয়ে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন মিরাজ। এর আগে ঘরের মাঠে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ভারতের বিপক্ষে সবশেষ এই কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন অফ স্পিনার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button